কানাডায় ফেডারেল নির্বাচনের আগাম ভোট শুরু

কানাডার ফেডারেল নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে আগাম ভোট গ্রহণ। স্থানীয় সময় অনুযায়ী শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া এই ভোট গ্রহণ চলবে চারদিনব্যাপী—১৮, ১৯, ২০ ও ২১ এপ্রিল। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ভোট দিতে পারবে ভোটাররা।

নির্বাচন কানাডার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নির্ধারিত চার দিনের যেকোনো দিন ভোটাররা তাদের নির্ধারিত ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন। মূল নির্বাচনের দিনের ভিড় এড়াতে আগাম ভোটে অংশ নিতে আগ্রহী অনেক ভোটারই এই সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছেন।

এই সময়টা রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তারা ভোটারদের মন জয় করার শেষ মুহূর্তের চেষ্টায় নেমেছে। ভোটারদের ভোটার কার্ড এবং একটি সরকার স্বীকৃত পরিচয়পত্র সঙ্গে নিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

চলমান নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আগাম ভোটের ফলাফল পুরো নির্বাচনের চিত্র পাল্টে দিতে পারে। কারণ অনেক ভোটার এখনো সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন।

এদিকে, ২৮ এপ্রিল নির্ধারিত হয়েছে মূল ভোট গ্রহণ দিন। তবে তার আগে অনুষ্ঠিত হয়েছে দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিতর্ক বা ডিবেট, যেটি কানাডার জাতীয় নির্বাচনের আগে একটি নিয়মিত প্রথা। বুধবার ও বৃহস্পতিবার, দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত এই ডিবেটের একটি ছিল ফ্রান্স ভাষায় এবং অপরটি ইংরেজিতে।

দুদিনের এই বিতর্কে আলোচনার মূল কেন্দ্রবিন্দু ছিল কানাডার অর্থনীতি এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের আরোপিত শুল্ক। এই শুল্ক কিভাবে কানাডার অর্থনীতিকে প্রভাবিত করতে পারে, সেই বিষয়েই বিশ্লেষণ হয়েছে। পাশাপাশি নাগরিকদের জীবনমান উন্নয়ন ও সমস্যা সমাধানে নেতারা তাদের নিজ নিজ দলীয় অবস্থান তুলে ধরেছেন।

তবে এই বিতর্কে একবারও আলোচনায় আসেনি ইমিগ্রেশন পলিসি। অথচ দেশজুড়ে চলমান রাজনৈতিক উত্তাপের কেন্দ্রে ইমিগ্রেশন ইস্যুই বড় ভূমিকা রেখেছে। এবারের নির্বাচনে প্রচারণা শুরু থেকেই অভিবাসীদের নিয়ে কোনো আলোচনা তেমনভাবে দেখা যায়নি, যা অনেককে বিস্মিত করেছে।

বর্তমানে কানাডার রাজনৈতিক অঙ্গন একটি উত্তপ্ত সময় পার করছে। ভোটারদের মন পেতে রাজনৈতিক নেতারা একপ্রকার মরিয়া হয়ে উঠেছে। অন্যদিকে অনেক ভোটার এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি, কাকে তারা তাদের মূল্যবান ভোটটি দেবেন।

উল্লেখযোগ্যভাবে, এখন পর্যন্ত কোনো রাজনৈতিক দলই তাদের ইলেকশন ম্যানিফেস্টো প্রকাশ করেনি, যা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে।

এদিকে ‘দ্য টরেন্টোস্টার দ্য সিগন্যাল’ পরিচালিত এক গড় জরিপে দেখা গেছে, লিবারেল পার্টি বর্তমানে এগিয়ে রয়েছে ৪২.৪ শতাংশ সমর্থন নিয়ে। তারা ৩৪৩টি আসনের মধ্যে ১৭৭টি আসনে এগিয়ে রয়েছে, যেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে প্রয়োজন ১৭২টি আসন। অন্যদিকে কনজারভেটিভ পার্টির সমর্থন রয়েছে ৪০.২ শতাংশ, এবং তারা ১৩০টি আসনে এগিয়ে রয়েছে।

অন্য দুই গণমাধ্যম, সিটিভি ও গ্লোবাল মেইল পরিচালিত জরিপেও লিবারেল পার্টির অবস্থান এগিয়ে থাকার ইঙ্গিত দিয়েছে

তথ্যসূত্র: সমকাল

Leave a Reply